তারিখঃ ২৮ অক্টোবর ২০১৬
বন্ধুগণ। গুরুজন বলিয়াছেন, ” এই বঙ্গে তুমি কাক গণিয়া শেষ করিতে পারিবে হয়তো, কিন্তু কবি নহে। ” অথচ এই আমি কবি হইয়াও হইতে পারিলাম না ।
যে সময়ের কথা কহিতেছি, ঐ সময় পাড়ায় পাড়ায় বড় ভাই, ছোট ভাইরা মিলিয়া চাঁদা তুলিয়া ক্লাব তৈরি করা, লাইব্রেরি বানানো, সংস্কৃতি চর্চা করা, – এরকম, নানারকম উদ্যম সারাবছর লাগিয়াই থাকিত। পাড়ায় পাড়ায় চলিত কাঠের শিল (কাঠের উপর এলুমিনিয়ামের নকশা) দিয়া খেলার প্রতিযোগিতা, – দারিয়াবান্দা, ছি বুড়ি, দাবা, লুডু, ফুটবল, হকি, ক্রিকেট, – কিনা থাকিত সে সময়।
বড় ভাইয়েরা একুশে ফেব্রুয়ারীর আগে বলিলেন এবার হইবে ‘একাংকিকা ‘ লেখার প্রতিযোগিতা । সেই প্রথম আমার নিজ হস্তে কিছু লিখিবার প্রয়াস। ক্লাস ফাইভ বা সিক্স হইবে বোধহায় । উহার ফলাফল কি হইয়াছিল তাহা এখন আর মনে নাই । ( এখানে উহা অপ্রাসঙ্গিকও বটে )
যাইহোক, ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হইবার পর শুনিলাম ‘ ট্যালেন্ট শো ‘ হইবে । কে কী করিতে পারে দেখাইয়া নিজেকে ট্যালেন্ট প্রমাণ করিতে হইবে (Cultural Show) । সিলেকশনের দিন আমি আমার স্বরচিত কবিতা লইয়া উপস্তিত । যখন আমার পালা আসিল স্যার বলিলেন, “বাবা তুমি কি করিবে ?” আমি আমার স্বরচিত কবিতা ৩/৪ লাইন পড়িবার আগেই স্যার বলিলেন, ” তোমার ট্যালেন্ট বুঝিবার মত ট্যালেন্ট আমার নাই বাবা । তুমি নেক্সট ট্যালেন্ট শো তে কিছু করিও । ” বিঃ দ্রঃ পাঠকগন, জানিয়া ব্যাথিত হইবেন ক্যাডেট কলেজে একবারই ট্যালেন্ট শো হয় ক্লাস সেভেনে থাকিতে।
ট্যালেন্ট শোতে কেউ নাটিকা করিল, কেউ পড়িল কবিতা, কেউ বলিল কৌতুক, কেউ ভাঙ্গা (Break dance) নৃত্য দেখাইল, আবার কেউবা গাহিল গানঃ
ব্যাঙের আবার সর্দি, ব্যাঙের আবার সর্দি,
ব্যাঙ করে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ।
আর আহা আমি বেচারা …… ।। ভাবিয়াছিলাম একসময় কবিতা লিখিব ‘ কবি শহীদ রেজা ‘ নামে । কিন্তু সেইদিনই আমার কবি সত্ত্বা শহীদ হওয়ায় শুধু ‘রেজা’ ই বাকি থাকিল। কবির ভাষায় বলিতে নারি, –
হতে পারতুম আমি মস্ত বড় এক কবি
হয়তো বাংলা সাহিত্যের দ্বিতীয় রবি
কিন্তু অংকুরে বিনাশ হল সবি
নইলে,…… চটে মোটেই তো ……
[ আমার জীবনপঞ্জিঃ ০১ ]
Leave a Reply