মায়ের চিঠি


১৯৯২-৯৩ সাল । ২০৩ নম্বর রুম, তিতুমীর হাউস , রংপুর ক্যাডেট কলেজ । একা আমি এক রুমে ( নিজেকে মনে হতো, এই আমি এত্তবড় …। এবার Reunion এ ভুল ভাঙ্গল । যখন ২০৩ নং রুমে গিয়ে হাউস প্রিফ্যাক্ট কে দেখে বিস্ময়ে অস্ফুট ভাবে আমার মুখ দিয়ে বের হল – তুমি এতো পিচ্চি ! তুমি হাউস…

১৯৯২-৯৩ সাল । ২০৩ নম্বর রুম, তিতুমীর হাউস , রংপুর ক্যাডেট কলেজ । একা আমি এক রুমে ( নিজেকে মনে হতো, এই আমি এত্তবড় …। এবার Reunion এ ভুল ভাঙ্গল । যখন ২০৩ নং রুমে গিয়ে হাউস প্রিফ্যাক্ট কে দেখে বিস্ময়ে অস্ফুট ভাবে আমার মুখ দিয়ে বের হল – তুমি এতো পিচ্চি ! তুমি হাউস প্রিফ্যাক্ট ! হা হা । কতবড়ই না ছিলাম আমি। )

সে সময় চিঠি লেখা ছিল বাধ্যতামূলক । বাবা মায়ের সাথে যোগাযোগের একমাত্র উপায় । বাবার চিঠির বিষয় ছিল – সবসময় পড়াশুনা আর প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি । এবং তোমাকে বড় হতে হবে, এই এই করবে, ঐ কাজগুলি করবে না, ইত্যাদি। আর মায়ের চিঠির বিষয় ? আসুন সেই গল্পটাই শোনাই আপনাদের।

রাতে শোবার আগে হাউস বেয়ারার আলতাফ ভাই আমার একটা চিঠি (খাম) দিলেন । খুলে দেখি মায়ের লেখা । মায়ের চিঠির ভাষা যে কি অপূর্ব আর অপার্থিব হয় তা হয়তো এই প্রজন্মের অনেকেই কখনই জানতে পারবে না । প্রতিটি শব্দে স্নেহ, মায়া, মমতা, ভালোবাসা সিক্ত থাকে । সেই লেখার উপর আঙুল বোলালে, চোখ বোলালে সেই মমতায় হৃদয় সিক্ত হয়ে যেত, চোখ বাধা মানত না ।

মা চিঠির শেষ প্যারায় লিখলেন ” বাবা শোবার সময় মশারীটার চারকোনা গুঁজে শুবি যাতে মশা না ঢুকে ।” মা’রা সন্তানদের কত ছোট ছোট জিনিসই না খেয়াল রাখেন । সেই রাতে একা চিঠি হাতে, একা রুমে অন্ধকারে, চোখে পানি নিয়ে অনেকটা রাত আমার নির্ঘুম কাটলো ।

রংপুরে এসেছি ক’টা দিন আমার মায়ের সাথে কাটাতে । এখন যে তাঁর মশারীটা আমার গুঁজে দেয়া দরকার ।

৭ জুন ২০১৭
২২৩ কটকিপাড়া, রংপুর


kholakash Avatar


More Articles & Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *